গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সহজ উপায়
প্রিয় পাঠক, আজকের ব্লগে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে কিছু ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবো,আশাকরি আপনাদের উপকারে আসবে। গুগল এডসেন্স ব্লগার, ইউটিউবার, বা ওয়েবসাইট মালিকদের কাছে একটি স্বপ্নের মতো। এটা শুধু ইনকামের মাধ্যমই না, বরং আপনার কন্টেন্টের মান প্রমাণ করারও একটি উপায়।
কিন্তু অনেকেই বারবার রিজেক্ট হওয়ার পর হতাশ হয়ে পড়েন। চিন্তা করবেন না! আজকে আমি আপনাকে ধাপে ধাপে শেখাবো কিভাবে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেতে পারেন সবটা সহজ বাংলায়। সুতরাং সাথে থাকুন কোথাও যাবেন না।
গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল |
কন্টেন্টই রাজা: মানসম্পন্ন ও ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করুন
গুগল এডসেন্সের প্রথম শর্ত হলো আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে হাই-কোয়ালিটি কন্টেন্ট থাকা। শর্টকাটে এগোলে চলবে না!
- ইউনিক ও তথ্যবহুল লেখা: কপি-পেস্ট কন্টেন্ট একদম নয়। গুগল AI ব্যবহার করা গুলো কন্টেন্ট চেক করে, তাই আপনি নিজের ভাষায় গুছিয়ে লিখুন।
- রেগুলার আপডেট: সপ্তাহে অন্তত ২-৩টি পোস্ট দিন। ওয়েবসাইট যেন ফ্রেশ থাকে।
- কীওয়ার্ড রিসার্চ: গুগল ট্রেন্ড, Ubersuggest বা SEMrush ব্যবহার করে জনপ্রিয় টপিক বাছুন। কিন্তু কীওয়ার্ড স্টাফিং (জোর করে কীওয়ার্ড ঢুকানো) এড়িয়ে চলুন।
ওয়েবসাইটের বেসিক সেটআপ ঠিক করুন
একটি প্রোফেশনাল ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হওয়া উচিত?
- কাস্টম ডোমেইন নাম (.com, .net): বিনামূল্যের সাবডোমেইন (যেমন .blogspot.com) এড়িয়ে চলুন। Namecheap বা GoDaddy থেকে ডোমেইন কিনুন।
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO): মেটা ট্যাগ, ডেসক্রিপশন, ALT ট্যাগ ঠিক করুন। পেজের লোডিং স্পিড ৩ সেকেন্ডের নিচে রাখতে GTmetrix টুল ব্যবহার করুন।
- মোবাইল ফ্রেন্ডলি: আপনার সাইটটি যেন মোবাইলেও পারফেক্ট দেখায়। Google’s Mobile-Friendly Test দিয়ে চেক করুন।
গুরুত্বপূর্ণ পেজ গুলি যোগ করুন
গুগল চায় আপনার সাইটটি ব্যবহার কারীদের জন্য ট্রাস্টেড হোক। তাই এই পেজগুলি অবশ্যই থাকা জরুরি:
- About Us: আপনার বা ব্লগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত লিখুন।
- Contact Page: ইমেইল বা ফর্ম যোগ করুন।
- Privacy Policy ও Disclaimer: GDPR মেনে তৈরি করুন। Privacy Policy Generator টুল ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রাফিক জেনারেট করুন
এডসেন্স অ্যাপ্লাই করার আগে কিছু অর্গানিক ট্রাফিক জমা করুন। মাসে কমপক্ষে ১০০০ ভিজিটর থাকলে ভালো।
- সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার: ফেসবুক গ্রুপ, Pinterest, Twitter এ কন্টেন্ট শেয়ার করুন।
- গেস্ট পোস্ট: অন্য ব্লগে গেস্ট পোস্ট লিখে ব্যাকলিংক তৈরি করুন।
- ইমেইল মার্কেটিং: Mailchimp দিয়ে সাবস্ক্রাইবার সংগ্রহ করুন।
এডসেন্স পলিসি মেনে চলুন
গুগলের নিয়ম না মানলে আপনার অ্যাপ্লিকেশন রিজেক্ট হবেই!
- প্রোহিবিটেড কন্টেন্ট: কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল, হেট স্পিচ, ভায়োলেন্স, অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট একদম নয়।
- Ad Placement: অ্যাড বসানোর আগে সাইটে ১০-১৫টি পোস্ট রাখুন। হেডার, সাইডবারে অ্যাড দিন, কিন্তু পেজে যেন অ্যাডে ভরে না যায়।
- Valid Clicks: নিজে বা ফ্রেন্ডদের দিয়ে ক্লিক করাবেন না। গুগল ধরে ফেলবে!
এডসেন্সে অ্যাপ্লাই করার সঠিক নিয়ম
যখন আপনার ওয়েবাসাইটে সব ঠিক ঠাক থাকবে সব প্রস্তুত, তখনই অ্যাপ্লাই করুন।
সাবমিট করার আগে চেকলিস্ট:
- ডোমেইন পুরোনো (৬ মাস+ হলে ভালো)।
- কন্টেন্ট ১০০% ইউনিক।
- সার্ভার আপটাইম ৯৯%+ (Hostinger, Bluehost ভালো হোস্টিং)।
- অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম: ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, ঠিকানা) সঠিক দিন। ট্যাক্স ইনফো (W-9/FORM) সঠিকভাবে পূরণ করুন।
রিজেক্ট হলে কি করবেন?
হতাশ হবেন না! ৯০% ব্লগার প্রথমবার রিজেক্ট হন।
- ফিডব্যাক চেক করুন: গুগল সাধারণত ইমেইলে রিজেক্টের কারণ জানায় (যেমন “Low value content”)। সেইমতো সংশোধন করুন।
- রিসাবমিট: ১ মাস পর আবার ট্রাই করুন।
সফলতার টিপস
- ধৈর্য্য রাখুন: এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল ১ সপ্তাহ থেকে ১ মাসও লাগতে পারে।
- গুগল টুলস ব্যবহার করুন: Search Console ও Analytics কানেক্ট করে ডাটা ট্র্যাক করুন।
- কমিউনিটি জয়েন করুন: ফেসবুক গ্রুপ বা Quora এ অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন।
শেষ কথা
গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেতে চাইলে Quality over Quantity মেনে চলুন। ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিলে সফলতা আসবেই। মনে রাখবেন, প্রতিটি রিজেক্টই আপনাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে! মনে রাখবেন হাল ছাড়া যাবে না।