সবার জন্য দরকারি কীবোর্ড শর্টকাট PDF – এক ক্লিকে সময় বাঁচান

কীবোর্ড শর্টকাট PDF: আমরা যারা প্রতিদিন কম্পিউটারে কাজ করি, তাদের জন্য কীবোর্ড শর্টকাট হচ্ছে এক রকম ম্যাজিক টুল। আপনার অফিসের কাজ হোক বা লেখাপড়া, মাউস না ছুঁয়ে কেবল কীবোর্ড দিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করা যায় এসব শর্টকাট দিয়ে। কিন্তু সবাই কি জানি এই শর্টকাট গুলো? নাকি শুধু Ctrl+C আর Ctrl+V দিয়েই সীমাবদ্ধ আমরা?

এই লেখায় আমরা আলোচনা করব দরকারি কীবোর্ড শর্টকাট, যেগুলো আপনার প্রতিদিনের কাজকে করে তুলবে অনেক সহজ আর দ্রুত। শুধু তাই না, পুরো শর্টকাট তালিকাটি পিডিএফ আকারে পাবেন যাতে চাইলেই সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। তো চলুন, শুরু করা যাক কীবোর্ডের এই রহস্যময় জগতে ভ্রমণ।

কীবোর্ড শর্টকাট PDF
কীবোর্ড শর্টকাট PDF

Table of Contents

কীবোর্ড শর্টকাট কী এবং কেন প্রয়োজন?

সময় বাঁচানোর সহজ উপায়

সময়ই টাকা এই কথাটি আমরা সবাই জানি। কীবোর্ড শর্টকাট হলো এমন এক জিনিস যা আপনাকে সময় বাঁচাতে সাহায্য করে। ধরুন আপনি একটা Word ফাইলে কাজ করছেন। হঠাৎ দরকার হলো কোনো লেখা কপি করে অন্য জায়গায় পেস্ট করার। যদি আপনি মাউস ব্যবহার করেন, তাহলে প্রথমে লেখাটি সিলেক্ট করতে হবে, তারপর রাইট ক্লিক করে কপি, তারপর আবার গিয়ে পেস্ট। বেশ সময় লাগবে, তাই না?

কিন্তু যদি আপনি Ctrl + C এবং Ctrl + V ব্যবহার করেন, তাহলে কয়েক সেকেন্ডেই কাজ শেষ। শুধু কপি-পেস্ট নয়, আরো অনেক কাজ যেমন ফাইল খোলা, বন্ধ করা, প্রিন্ট দেওয়া, সেভ করা সবই করা যায় মাত্র এক-দুইটি বাটন চেপেই।

মাউসের উপর নির্ভরতা কমানো

অনেক সময় আমাদের মাউস কাজ করে না বা নষ্ট হয়ে যায়। তখন যদি কীবোর্ড শর্টকাট জানা থাকে, তাহলে মাউস ছাড়াই পুরো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এমনকি যারা দ্রুত টাইপ করতে চান, তাদের জন্য মাউস না ছুঁয়ে শুধু কীবোর্ড দিয়েই কাজ করা অনেক বেশি কার্যকর।

আরো মজার ব্যাপার হলো যারা প্রফেশনাল গ্রাফিক ডিজাইনার বা ভিডিও এডিটর, তারাও কীবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করে থাকেন যাতে কাজের গতি বাড়ে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, শর্টকাট জানা মানে স্মার্ট কাজ করা।

শর্টকাট কী ব্যবহার করলে কী সুবিধা পাওয়া যায়?

কর্মদক্ষতা বাড়ায়

কর্মদক্ষতা বাড়ানো মানেই কম সময়ে বেশি কাজ করা। অফিসে বা স্কুলের প্রজেক্টে যেখানে সময় কম, সেখানে কীবোর্ড শর্টকাট আপনার গতি বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। যেমন ধরুন, আপনি যদি Ctrl + S দিয়ে বারবার ফাইল সেভ করেন, তাহলে ফাইল হারানোর ভয় থাকে না। আবার Alt + Tab ব্যবহার করে আপনি একসাথে একাধিক সফটওয়্যার বা উইন্ডোর মধ্যে সুইচ করতে পারেন। এতে করে কাজের ফ্লো বজায় থাকে।

স্মার্টলি কাজ করা যায়

আপনি যদি শর্টকাট ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে সেটা আপনার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়। স্মার্ট মানুষরাই সবসময় কাজকে সহজ করে নিতে চায়। কাজের ধরন বুঝে যদি সঠিক শর্টকাট ব্যবহার করা যায়, তাহলে সেটা শুধু আপনাকেই না, আপনার টিমের সময়ও বাঁচাবে।

আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যাক ধরুন আপনি কোনো ওয়েবসাইটে কিছু খুঁজছেন। Ctrl + F চাপলেই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত শব্দটি খুঁজে পাবেন। এই ছোট্ট কাজটি সময় বাঁচানোর পাশাপাশি আপনাকে অন্যদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে রাখবে।

কীবোর্ড শর্টকাট PDF
কীবোর্ড শর্টকাট PDF

কীবোর্ড শর্টকাট শেখার সহজ উপায়

নিয়মিত চর্চা

যেকোনো কিছু শেখার জন্য চর্চা খুব জরুরি। শর্টকাট শেখার ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। প্রথমে মনে রাখাটা কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন অন্তত ৫টি নতুন শর্টকাট ব্যবহার শুরু করেন, এক সপ্তাহে ৩৫টি শর্টকাট আপনার আয়ত্তে চলে আসবে।

অফিসের প্রতিদিনের কাজে, লেখাপড়ার সময় বা ব্রাউজিংয়ের সময় এই শর্টকাট গুলো ব্যবহার করতে থাকুন। দেখবেন, কিছুদিন পর শর্টকাট গুলো এমনিতেই মনে থাকবে। ঠিক যেমন সাইকেল চালাতে শেখার সময় হয়।

টিপস মনে রাখার ট্রিকস

  • এক ধরনের কাজের শর্টকাট আলাদা করে রাখুন। যেমন ওয়ার্ডের জন্য আলাদা, এক্সেলের জন্য আলাদা।
  • এক পৃষ্ঠা শর্টকাটের তালিকা প্রিন্ট করে ডেস্কে রেখে দিন।
  • প্রতি সপ্তাহে একটা নতুন শর্টকাট ফোকাস করুন।

এইসব ছোট ছোট ট্রিক ব্যবহার করলে শর্টকাট শেখা হয়ে যাবে একদম সহজ।

প্রয়োজনীয় শর্টকাট কী তালিকা

এই অংশে আমরা আলোচনা করব সবচেয়ে দরকারি কীবোর্ড শর্টকাটগুলো নিয়ে। নিচের শর্টকাট গুলোর PDF ফাইল আপনি পোস্টের নিচে থেকে ডাউনলোড করে রাখতে পারবেন।

Windows শর্টকাট কী

শর্টকাট কাজ:

  1. Ctrl + C = কপি করা
  2. Ctrl + X = কাট করা
  3. Ctrl + V = পেস্ট করা
  4. Ctrl + Z = পূর্বের অবস্থায় ফেরা (Undo)
  5. Ctrl + Y = আবার আগের কাজ ফিরিয়ে আনা (Redo)
  6. Ctrl + A = সব লেখা সিলেক্ট করা
  7. Ctrl + S = সেভ করা
  8. Ctrl + P = প্রিন্ট দেওয়া
  9. Alt + F4 = প্রোগ্রাম বন্ধ করা
  10. Ctrl + F = লেখা খোঁজা

Microsoft Word – শর্টকাট

Microsoft Word ব্যবহার করেন কিন্তু শর্টকাট জানেন না এটা কিন্তু ঠিক না। কারণ এই সফটওয়্যারটি আমরা লেখালেখির জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি। টাইপিং, এডিটিং, ফরম্যাটিং সবকিছুতেই শর্টকাট ব্যবহার করলে কাজ দ্রুত হয় এবং মাউসের উপর নির্ভরতা কমে।

চলুন দেখি Microsoft Word এর সবচেয়ে দরকারি কীবোর্ড শর্টকাট গুলো:

  1. Ctrl + A = ডকুমেন্টে থাকা সব লেখা একবারে সিলেক্ট করতে ব্যবহার করুন এই কমান্ডটি।
  2. Ctrl + B = যেকোনো লেখাকে মোটা বা বোল্ড করতে ব্যবহার হয়, যেন সেটা আলাদাভাবে চোখে পড়ে।
  3. Ctrl + C = কোনো লেখা বা ছবি কপি করতে এই শর্টকাট আপনার হাতের বন্ধু।
  4. Ctrl + D = ফন্ট সেটিংস বা ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য ফন্ট ডায়ালগ বক্স খুলে দেয়।
  5. Ctrl + E = লেখাকে একদম মাঝ বরাবর নিয়ে আসতে চাইলে এই কমান্ডটাই ব্যবহার করুন।
  6. Ctrl + F = ডকুমেন্টের ভেতরে কোনো নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্য খুঁজে পেতে হলে এটি অপরিহার্য।
  7. Ctrl + G = নির্দিষ্ট পৃষ্ঠায় দ্রুত যেতে চাইলে এই শর্টকাট খুবই কার্যকর।
  8. Ctrl + H = Replace অপশন আনতে হলে-যেমন, একটা শব্দ অন্য দিয়ে বদলাতে চাইলে এই শর্টকাট ব্যবহার হয়।
  9. Ctrl + I = লেখা বাঁকা বা Italic করতে এই শর্টকাট দিয়ে এক ক্লিকেই কাজ শেষ।
  10. Ctrl + J = লেখা দুই পাশে সমানভাবে সাজিয়ে নিতে চাইলে এটা কাজে দেয়-একদম প্রফেশনাল লুক!
  11. Ctrl + K = কোনো লেখা বা ছবিতে ওয়েব লিংক যুক্ত করতে চাইলে এই শর্টকাটই ঠিক আছে।
  12. Ctrl + L = লেখাকে বামদিকে সাজাতে ব্যবহার করা হয়।
  13. Ctrl + M = প্যারাগ্রাফের শুরু একটু ভেতরে আনার জন্য (Tab ইনডেন্ট) এটি কাজে লাগে।
  14. Ctrl + N = একদম নতুন একটা ডকুমেন্ট খুলে ফেলতে চাইলে এই শর্টকাট চেপে দিন।
  15. Ctrl + O = আগের কোনো ফাইল বা সেভ করা ডকুমেন্ট খুলতে হলে কাজে আসে।
  16. Ctrl + P = ডকুমেন্ট প্রিন্ট দেওয়ার জন্য সরাসরি প্রিন্ট উইন্ডো খুলে দেয়।
  17. Ctrl + R = লেখাকে ডানদিকে সাজাতে বা Right Alignment দিতে ব্যবহার হয়।
  18. Ctrl + S = কাজ করার সময় বারবার সেভ করতে ভুলবেন না-এই শর্টকাটই সেভ করে রাখে সব কিছু।
  19. Ctrl + T = প্যারাগ্রাফের দ্বিতীয় লাইন থেকে কিছুটা জায়গা সরিয়ে নিতে ব্যবহৃত হয়।
  20. Ctrl + U = লেখার নিচে দাগ টানতে (Underline) চাইলে এই শর্টকাট আপনার উপকারে আসবে।
  21. Ctrl + V = যেটা আপনি কপি করেছেন, সেটা যেখানে চাইছেন সেখানে বসিয়ে দিতে পেস্ট কমান্ড লাগে।
  22. Ctrl + W = প্রোগ্রাম না বন্ধ করেও ডকুমেন্ট বন্ধ করার শর্টকাট এটা।
  23. Ctrl + X = কপি নয়, একদম কেটে সরিয়ে দিতে হলে কাট কমান্ড ব্যবহৃত হয়।
  24. Ctrl + Y = যেটা Undo করেছিলেন, সেটা আবার ফিরিয়ে আনতে (Redo) এই শর্টকাট ব্যবহার করা হয়।
  25. Ctrl + Z = কোনো ভুল হয়ে গেলে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য এই শর্টকাট অব্যর্থ।

এডভান্স MS Word কীবোর্ড শর্টকাট (বাংলায় ব্যাখ্যা সহ)

আপনি যদি শুধু সাধারণ শর্টকাটে সীমাবদ্ধ না থেকে Word এ আরও দক্ষ হতে চান, তাহলে নিচের এই এডভান্স লেভেলের শর্টকাটগুলো জানতেই হবে। সময় বাঁচানোর সাথে সাথে কাজের স্মার্টনেসও বাড়াবে এই কমান্ডগুলো।

  1. Alt + Ctrl + Z আপনি শেষ চারটি সম্পাদনার স্থানে দ্রুত ফিরে যেতে পারবেন এই শর্টকাট দিয়ে।
  2. Ctrl + Page Up যেখানে পূর্বে কিছু এডিট করেছেন, সেখানে ফিরে যেতে হলে এই কমান্ড সাহায্য করে।
  3. Ctrl + Page Down সামনের দিকে করা সংশোধনে যেতে চাইলে এটি কাজে আসে।
  4. Ctrl + Backspace কার্সরের বাম পাশে থাকা একটি শব্দ একদম সরিয়ে ফেলতে এটি ব্যবহার হয়।
  5. Ctrl + Delete কার্সরের ডান দিকে থাকা একটি সম্পূর্ণ শব্দ ডিলিট করতে সাহায্য করে।
  6. Alt + Shift + R হেডার বা ফুটারের আগের লেখা বা ডিজাইন কপি করার শর্টকাট এটি।
  7. Ctrl + Alt + V পেস্ট করার সময় স্পেশাল পেস্ট অপশন পেতে চাইলে এটি ব্যবহার করুন।
  8. Ctrl + Shift + V শুধুমাত্র ফরম্যাট বা স্টাইল পেস্ট করতে হলে এই শর্টকাট উপযোগী।
  9. Ctrl + F9 কোনো ফিল্ড যেমন Date, Page Number ইনসার্ট করতে চাইলে এটা ব্যবহার হয়।
  10. Shift + Enter প্যারাগ্রাফ শেষ না করেই একটি নতুন লাইন শুরু করতে চাইলে এটি চাপুন।
  11. Ctrl + Enter একটি নতুন পেজে কাজ শুরু করতে চাইলে Page Break দিতে এই শর্টকাট ব্যবহার হয়।
  12. Ctrl + Shift + Enter একই কলামে নতুন অংশ শুরু করতে চাইলে এটি ব্যবহার করা হয় (Column Break)।
  13. Alt + Ctrl + Minus Sign (-) ড্যাশ (-) চিহ্ন ইনসার্ট করার শর্টকাট।
  14. Ctrl + Minus Sign (-) আরেকটি ড্যাশ ইনসার্ট করার বিকল্প উপায়।
  15. Ctrl + Hyphen (-) আপনি চাইলে একটি অপশনাল হাইফেন ইনসার্ট করতে পারেন এটির সাহায্যে।
  16. Ctrl + Shift + Hyphen Non-breaking hyphen যোগ করতে এই শর্টকাট ব্যবহার করুন।
  17. Ctrl + Shift + Spacebar Non-breaking space দিতে হলে এটি খুব কার্যকর।
  18. Alt + Ctrl + C কপিরাইট (©) প্রতীক ইনসার্ট করতে চাইলে এটি চেপে দিন।
  19. Alt + Ctrl + R রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক ® সাইন ইনসার্টের জন্য ব্যবহার হয়।
  20. Alt + Ctrl + T Trademark ™ চিহ্ন যোগ করতে এই শর্টকাট কাজে লাগে।
  21. Alt + Ctrl + Full Stop (.) উপবৃত্ত (…) চিহ্ন সহজে বসানোর শর্টকাট।

এই শর্টকাটগুলো নিয়মিত ব্যবহার করলে Word এর টাইপিং হবে অনেক বেশি স্মুথ ও ফাস্ট।

Microsoft Excel – শর্টকাট

Excel ব্যবহার যারা করেন, তারা জানেন একটা সঠিক শর্টকাট কত সময় বাঁচাতে পারে। অল্প কিছু শর্টকাট জানলেই বিশাল ডেটা ম্যানেজ করা হয়ে যায় খুব সহজে।

নিচে দেয়া হল কিছু গুরুত্বপূর্ণ Excel শর্টকাট:

শর্টকাট কাজ:

  1. Ctrl + Arrow Keys = দ্রুত কোন সেল এ যাওয়া
  2. Ctrl + Shift + L = ফিল্টার অন/অফ করা
  3. Ctrl + ; = বর্তমান তারিখ বসানো
  4. Ctrl + Shift + “+” = নতুন সেল ইনসার্ট করা
  5. Ctrl + Shift + “=” = সেল ডিলিট করা
  6. F2 = সেল এডিট করা
  7. Alt + = AutoSum = ফাংশন চালু করা
  8. Ctrl + Space = পুরো কলাম সিলেক্ট করা
  9. Shift + Space = পুরো রো সিলেক্ট করা

এই শর্টকাটগুলো ব্যবহারে আপনার Excel কাজ হবে নিখুঁত ও সুসংগঠিত।

Internet Browser শর্টকাট

আমরা সবাই প্রতিদিন ইন্টারনেটে সময় কাটাই। জানলে অবাক হবেন, আপনার ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্স অনেক মজাদার হয়ে উঠতে পারে শুধুমাত্র কিছু শর্টকাট ব্যবহারের মাধ্যমে।

নিচে দেয়া হল জনপ্রিয় ব্রাউজার শর্টকাট গুলো:

  1. Ctrl + T = নতুন ট্যাব খুলুন
  2. Ctrl + W = ট্যাব বন্ধ করুন
  3. Ctrl + Shift + T = বন্ধ হওয়া ট্যাব আবার খুলুন
  4. Ctrl + Tab = এক ট্যাব থেকে অন্য ট্যাবে যান
  5. Ctrl + D = পেজ বুকমার্ক করুন
  6. Ctrl + L / Alt + D = অ্যাড্রেস বারে কার্সর নিয়ে যান
  7. Ctrl + H = হিস্টোরি দেখুন
  8. Ctrl + J = ডাউনলোড লিস্ট খুলুন
  9. F5 = রিফ্রেশ করুন
  10. Ctrl + F = ওয়েবপেজে কোনো শব্দ খুঁজুন

এই শর্টকাট গুলো শুধু সময়ই বাঁচায় না, বরং ওয়েব ব্রাউজিংকে করে তোলে আরো স্মার্ট এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি।

ফাইল ও ফোল্ডার ব্যবস্থাপনা শর্টকাট

আপনার কম্পিউটারেই যদি হাজারো ফাইল থাকে, তবে একটা ফাইল খুঁজে পেতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু কিছু দরকারি শর্টকাট ব্যবহার করলে আপনি চটজলদি ফাইল খুঁজে পেতে পারেন এবং ম্যানেজও করতে পারেন খুব সহজে।

শর্টকাট কাজ:

  1. Ctrl + N = নতুন ফাইল এক্সপ্লোরার উইন্ডো খুলুন
  2. Alt + Enter = ফাইল/ফোল্ডারের প্রপার্টি দেখুন
  3. Ctrl + Shift + N = নতুন ফোল্ডার তৈরি করুন
  4. F2 = ফাইলের নাম পরিবর্তন করুন
  5. Ctrl + Shift + Delete = পার্মানেন্টলি ফাইল ডিলিট
  6. Alt + Left Arrow = আগের অবস্থানে যান
  7. Alt + Right Arrow = পরবর্তী অবস্থানে যান
  8. F5 = রিফ্রেশ করুন
  9. Ctrl + E = সার্চ বক্সে কার্সর নিন
  10. Ctrl + A = সব ফাইল সিলেক্ট করুন

এই শর্টকাটগুলো আপনাকে আপনার ফাইলের জগতে একদম মাস্টার বানিয়ে তুলবে।

কীবোর্ড শর্টকাট নিয়ে কিছু মজার তথ্য

শর্টকাটের ইতিহাস

কি-বোর্ড শর্টকাট কিন্তু হঠাৎ করে আসে নি। ১৯৮০ সালের দিকে যখন গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) চালু হয়, তখন থেকেই শর্টকাটের ব্যবহার শুরু হয়। তখনকার দিনে Apple কোম্পানি প্রথম ফিচার হিসেবে শর্টকাট কী চালু করে তাদের কম্পিউটারে।

এরপর ধীরে ধীরে Microsoft এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এই সুবিধা নিয়ে আসে। একটা ছোট্ট শর্টকাট কমান্ড দিয়ে শত শত কমান্ড চালানো সম্ভব এটা বুঝতেই সময় লাগেনি ব্যবহারকারীদের।

কোন শর্টকাট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়?

বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শর্টকাট হলো:

  1. Ctrl + C (Copy)
  2. Ctrl + V (Paste)
  3. Ctrl + Z (Undo)
  4. Ctrl + S (Save)

এই চারটি শর্টকাট ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন কম্পিউটার জীবন কল্পনাই করা যায় না!

কীবোর্ড শর্টকাট PDF ফাইল কীভাবে ডাউনলোড করবেন?

অনেকেই জানতে চান এই এত কীবোর্ড শর্টকাট শেখার পর এগুলো মাথায় রাখবেন কীভাবে? সবসময় তো মনে থাকবে না, তাই না? এজন্যই দরকার একটি সহজবোধ্য, সুন্দরভাবে সাজানো কীবোর্ড শর্টকাট PDF। আপনি একবার ডাউনলোড করে রাখলেই যখন দরকার তখন খুলে দেখে নিতে পারবেন।

সরাসরি লিংক থেকে ডাউনলোড

আমরা এই পোস্টে নিচে একটি ডাউনলোড লিংক দিয়েছি, যেখানে আপনি একটি সুন্দর ফরম্যাটে সব গুরুত্বপূর্ণ কীবোর্ড শর্টকাট PDF ফাইল পেয়ে যাবেন। শুধু লিংকে ক্লিক করলেই ডাউনলোড শুরু হবে। ফাইলটি একেবারে ছোট, মাত্র কয়েক কিলোবাইট, তাই মোবাইল বা পিসিতে কোনো সমস্যা ছাড়াই খুলতে পারবেন।  এইখানে ক্লিক করুন।

মোবাইলে বা পিসিতে পড়ার উপায়

PDF ফাইলটি ওপেন করতে আপনার মোবাইলে Adobe Reader বা অন্য কোনো PDF Reader অ্যাপ থাকতে হবে। কম্পিউটারে ওপেন করতে চাইলে Chrome বা Microsoft Edge দিয়েও পড়তে পারবেন।আর যদি আপনি অফলাইনে পড়তে চান, তাহলে PDF ফাইলটি মোবাইল বা ল্যাপটপে ডাউনলোড করে রাখুন। এতে করে ইন্টারনেট না থাকলেও আপনি যেকোনো সময় শেখা চালিয়ে যেতে পারবেন।একটা প্রিন্ট কপি নিয়ে ডেস্কে টানিয়ে রাখলেও মন্দ হয় না। এতে কাজ করতে করতে চোখে পড়ে যাবে এবং শেখাটাও হবে আরো সহজ।

শিক্ষার্থীদের জন্য কীবোর্ড শর্টকাটের গুরুত্ব

শিক্ষার্থীদের জীবন এখন ডিজিটাল। অনলাইন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, রিসার্চ-সবই এখন কম্পিউটার কেন্দ্রিক। এমন সময়ে কীবোর্ড শর্টকাট না জানলে পিছিয়ে পড়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

অনলাইন ক্লাসে দ্রুত নোট নেওয়া

অনেক সময় অনলাইন ক্লাসে শিক্ষক যেই তথ্যটি বললেন, সেটা দ্রুত লিখে নেওয়া দরকার। এই সময় আপনি যদি Ctrl + S, Ctrl + Z, বা Ctrl + A এর মতো শর্টকাট জানেন, তাহলে নোট নেয়া হয়ে যাবে অনেক দ্রুত এবং সঠিকভাবে। আপনি টাইপিং=এর সময়ও যদি Ctrl + B বা Ctrl + I ব্যবহার করেন, তাহলে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাইলাইট করাও হয়ে যাবে সহজে।

প্রেজেন্টেশন বানানো সহজ হয়

PowerPoint প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে গেলে কীবোর্ড শর্টকাট খুব কাজে দেয়। যেমন Ctrl + M দিয়ে আপনি নতুন স্লাইড আনতে পারবেন, Ctrl + D দিয়ে স্লাইড ডুপ্লিকেট করতে পারবেন। এরকম শর্টকাট ব্যবহার করলে আপনার প্রেজেন্টেশন হবে আরও প্রফেশনাল এবং সময়ও বাঁচবে।

শুধু একাডেমিক কাজ নয়, যেকোনো স্কিল শিখতে গেলেও শর্টকাট জানা মানেই স্মার্টলি শেখা।

চাকরি প্রার্থীদের জন্য শর্টকাট শেখার উপকারিতা

আজকের চাকরির বাজারে কেবল ডিগ্রিই যথেষ্ট নয়, চাই স্মার্ট কাজ করার স্কিল। অফিসে অনেক সময় কম্পিউটারে কাজ করতে হয়, যেমন রিপোর্ট তৈরি, ডেটা এন্ট্রি, ইমেইল টাইপিং, প্রেজেন্টেশন তৈরি এগুলোতে কীবোর্ড শর্টকাট জেনে রাখলে আপনি আপনার বসের চোখে হিরো হয়ে উঠতে পারেন।

অফিসে কাজের গতি বাড়ে

ধরুন আপনি Excel এ কাজ করছেন, রিপোর্ট বানাচ্ছেন, বা ওয়ার্ডে কোনো ডকুমেন্ট তৈরি করছেন। যদি শর্টকাট জানা থাকে তাহলে মাউস না ছুঁয়েই আপনি ডাটা ফরম্যাট করতে পারবেন, টেবিল বানাতে পারবেন, এমনকি প্রিন্ট কমান্ডও দিতে পারবেন চোখের পলকে। এতে আপনার কাজের স্পিড বাড়বে এবং বসও খুশি থাকবেন।

টাইপিং দক্ষতা বাড়ে

শর্টকাট জানলে টাইপিংয়ের সময়ও আপনার হাত থাকবে কীবোর্ডেই। মাউসের জন্য হাত সরাতে হবে না, ফলে টাইপিংয়ে ফ্লো বজায় থাকবে। এতে টাইপিংয়ের গতি এবং নির্ভুলতা দুইই বাড়বে।আপনার CV তে যদি “Proficient in keyboard shortcuts” লেখা থাকে, তাহলে সেটা একটা প্লাস পয়েন্ট হিসেবেই ধরা হয়।

সাধারণ ভুল যা শর্টকাট ব্যবহার করতে গিয়ে হয়ে থাকে

যদিও কীবোর্ড শর্টকাট শেখা বেশ সহজ, তারপরও কিছু সাধারণ ভুল প্রায় সবাই করে বসে। আর এই ভুলগুলো থেকেই তৈরি হয় বিভ্রান্তি বা বিরক্তি। চলুন দেখে নেই এমন কিছু সাধারণ ভুল যা শর্টকাট ব্যবহার করতে গিয়ে হয়ে থাকে।

ভুল কী কম্বিনেশন

অনেক সময় আমরা শর্টকাট চেপে ধরলেও কাজ হয় না। কারণ, সঠিক কী কম্বিনেশন ব্যবহার করা হয়নি। যেমন Ctrl + Shift + N দিয়ে নতুন ফোল্ডার তৈরি হয়, কিন্তু আপনি যদি শুধু Ctrl + N চাপেন, তাহলে হবে না। তাই প্রতিটি শর্টকাট ভালোভাবে মনে রাখা জরুরি।

শর্টকাট মনে না রাখা

যারা মাঝেমধ্যে কীবোর্ড ব্যবহার করেন, তারা অনেক সময় শর্টকাট ভুলে যান। এই সমস্যার সমাধান হলো রেগুলার চর্চা। আপনি প্রতিদিন শুধু ৫টি শর্টকাট নিয়মিত ব্যবহার করলেই ১ মাসে ১৫০টিরও বেশি শর্টকাট শিখে ফেলতে পারবেন । আরেকটা কৌশল আপনার ডেস্কে বা ডেস্কটপে শর্টকাট তালিকার একটা ছোট নোট রেখে দিন। এতে প্রতিদিন চোখে পড়বে এবং মনে রাখতে সহজ হবে।

শেষকথা,

কীবোর্ড শর্টকাট এখন আর শুধু কম্পিউটার গিকদের জন্য নয়। এটা আজকের ডিজিটাল যুগে প্রতিটি মানুষ ছাত্র, চাকরিপ্রার্থী, অফিস কর্মচারী, এমনকি গৃহিণীদের জন্যও জরুরি। শর্টকাট জানা মানে সময় বাঁচানো, কাজের গতি বাড়ানো এবং স্মার্টলি কাজ করা।

এই আর্টিকেলে আমরা চেষ্টা করেছি দরকারি সব শর্টকাট এক জায়গায় সাজিয়ে দিতে, যাতে আপনি প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন। এখন শুধু শেখা নয়, ব্যবহার করাই মূল কাজ।একটা কথা মনে রাখবেন প্রথমে কঠিন মনে হলেও, নিয়মিত চর্চায় সব কিছুই সহজ হয়ে যায়। কীবোর্ড শর্টকাট হোক আপনার ডিজিটাল লাইফের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

FAQs

1. কীবোর্ড শর্টকাট কীভাবে দ্রুত শেখা যায়?
ছোট ছোট ভাগে শর্টকাট শেখা শুরু করুন। প্রতিদিন ৫টি করে নতুন শর্টকাট ব্যবহার করুন এবং ডেস্কে একটা নোট রাখুন।

2. মোবাইলেও কি শর্টকাট কাজ করে?
অধিকাংশ শর্টকাট পিসির জন্য, তবে কিছু মোবাইল কীবোর্ড অ্যাপে শর্টকাট সাপোর্ট করে। তবে মোবাইলে অপশন কম।

3. কীবোর্ড শর্টকাট PDF কোথা থেকে পাওয়া যাবে?
এই পোস্টের নিচে একটি ডাউনলোড লিংক দেয়া আছে, সেখান থেকে পিডিএফ ফাইলটি নামিয়ে নিতে পারবেন।

4. কোন কোন শর্টকাট সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে?
Ctrl + C, Ctrl + V, Ctrl + S, Ctrl + Z  এই চারটি শর্টকাট সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং দরকারি।

5. কিবোর্ড শর্টকাট কি সবাই ব্যবহার করতে পারবে?
অবশ্যই! আপনি যদি টাইপ করতে জানেন, তাহলে শর্টকাট ব্যবহার করতেও পারবেন। শুধু নিয়মিত চর্চা দরকার।

Disclaimer

We do not guarantee that the information of this page is 100% accurate and up to date. Read More.

আমি রনি , একজন প্রযুক্তিপ্রেমী। এই ওয়েবসাইটে আমি নতুন সব গ্যাজেট, সফটওয়্যার আর অ্যাপ নিয়ে কথা বলি। আমার লক্ষ্য হলো জটিল টেকনোলজিকে সহজ ভাষায় তোমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, যাতে তোমরাও এই ডিজিটাল দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারো।

Leave a Comment